তৃণমূলের সরকারি অফিসগুলোকে দুর্নীতির আখড়া বানানোর পেছনে সম্পূর্ণ দায় আনসার বাহিনীর। পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ ও সরকারি হাসপাতালগুলোয় এরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত দালালের ভূমিকা পালন করে। অন্য দালালদের মাঝেমধ্যে আইনগত ঝামেলায় পড়তে হয়, এদের ক্ষেত্রে সেটা হয় না। এসব অফিসের সেবা যারা নিয়েছেন তাদের এটা ভালোই জানার কথা। রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তন আসতে শুরু করায় এবং এর ফলে এদের অবৈধ উপার্জন বন্ধ হওয়ায় রাস্তায় নেমে এগুলো করছে।
গত পনের বছরে ছাত্রলীগের যেসব সদস্যদের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ছাড়া কোনো দক্ষতা বা মেধা ছিলনা, তাদেরকে কিছু পুলিশে এবং অধিকাংশকে এই বাহিনীতে পুনর্বাসন করা হয়েছে। রাস্তায় নেমে ছাত্রদের মারধর, সচিবালয় ঘেরাও করা, উপদেষ্টা ভেবে রাস্তায় গাড়ি ধাওয়া করা, গালি-গালাজ করা একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর আচরণ হতে পারে না, এটা ছাত্রলীগের আচরণ।
এটা ঠিক যে, ছয়মাস রেস্ট প্রথা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কিছুটা অমানবিক। এদেশে চাইলেই চাকরি জোটানো যায় না। কিন্তু এতো বছর যেহেতু এরা এটা মেনে চাকরি করতে পেরেছে, নিশ্চয়ই আরও ছয়মাস পারতো এবং এই সময়ে সরকার মোটামুটি গুছিয়ে উঠতো। কিন্তু সরকার গঠনের ছয়দিন না যেতেই এমন কর্মকাণ্ড উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সন্দেহজনক। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আনসার ছদ্মবেশে ফেরত এসেছে কিনা তাও বিবেচনার বিষয়।
যেহেতু এরা বৈষম্য বন্ধের দাবি করেছে, তাই ছয়মাসের রেস্ট প্রথা বাতিল করা হোক। এবং একইসাথে সকল পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল দুর্নীতিবাজ আনসারকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করা হোক। এক জায়গায় বৈষম্য দূর হবে, অন্য জায়গায় হবে না এটা তো হতে পারে না! দেশে অনেক মেধাবী আছে যারা অর্থাভাবে উচ্চমাধ্যমিকের বেশি পড়াশোনা করেনি, আবার রাজনৈতিক বা মামু-খালুর জোরও নেই, এদের দিয়ে খুব সহজেই এই শূন্যস্থান পূরণ করা যাবে।
নিজেদের ‘বাহিনী’ হিসেবে দাবি করলে বাহিনীর মতোই সুশৃঙ্খল থাকতে হবে।